সেই লেখক ভদ্রলোককে কেমন দেখতে, কত বয়েস, কোথায় থাকেন, কী করেন, এসব কিছুই জানিনা। সত্যি বলতে কি, ভদ্রলোক আদৌ আছেন কি নেই, তাও জানিনা ঠিক করে। ভদ্রলোকের আমার জীবনে উপস্থিতি বলতে ওনার বই। একটাই বই। আসলে ভদ্রলোক জাস্ট ওই একটাই বই লিখেছেন।
ভদ্রলোকের লেখার মান আহামরি কিছু নয়। বাংলায় লেখেন। ভাষাটা সাধু-চলিত মিলেমিশে একটা চলনশই আকার ধারণ করে। অর্থাৎ, যে ভাষায় আমরা আড্ডা মেরে থাকি, তার চেয়ে সামান্য কিছু ডিগ্রি কুলীন। লেখার স্টাইল, পেস, আইডিয়া, কোনটাই ঠিক আহা-এমনটা-তো-আগে-দেখিনি নয়।
ভদ্রলোকের লেখার মধ্যে যেটা আসল, সেটা হচ্ছে গল্প বলার মজলিসি বৈঠকি ধরন। চরিত্রগুলো যেন উনি ঠিক পরিশ্রম করে ভেবেচিন্তে গঠন করেন না। আমাদের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যে সব সাধারণ মানুষজন আছে, তাদের মধ্যে থেকে স্রেফ বেছেবুছে দুচারজন-কে তুলে নিয়ে গল্পের রেলগাড়িতে তুলে দেন। ব্যস, ওনার দায় ওইটুকুই। তারপর সেই গল্পের রেলগাড়ি নিজগুণেই গড়গড়িয়ে এগিয়ে চলে, আর তার সাথে গল্পও এগোয় তরতরিয়ে। যেন, লেখকের কোন দায় নেই, স্রেফ কয়লা জোগান দেওয়া ছাড়া। চরিত্র, সম্পর্কগুলো নির্বাচন করে দেওয়া হয়ে গেছে, এরপর নেহাতই তাদের নিজেদের ব্যাপার। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া সেরে নেওয়ার, গল্পের গতি, পরিনতি, ইত্যাদি বুঝে নেওয়ার। তাদের সমস্যা, সুখদুঃখ বা অন্য কোনরকম ঘটনার দায় নিতে লেখকের একান্তই অনীহা।
ঠিক এই ব্যাপারটাই আমার ভীষণ, ভীষণ ফ্যাসিনেটিং লাগে। কি করে পারেন ভদ্রলোক, এতটা নিরপেক্ষ, এতটা নির্লিপ্ত হতে? কি করে পারেন, ওদের সমস্যাগুলো কলমের আঁচড়ে এক কথায় মিটিয়ে না দিতে? কেন দুটো ছেলেমেয়ে স্রেফ মুখ ফুটে বলতে না পেরে সারাজীবন শুধু কষ্টই পেয়ে যাবে? কেন বাবা দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্যে কোনোদিন মা-কে স্যরি-টা বলে উঠতে পারবেনা? কেন পাশের বাড়ির ভাড়াটের ছেলেটা নিজের দায় স্বীকার করে চিঠিটা লিখেও ষোল বছর ধরে শুধু জমিয়েই রাখবে, কোনোদিন সাহস করে পোস্টবক্সে ফেলেতে পারবে না? কেন মেয়েটা সব জেনেবুঝেও তার মিথ্যে সংসারটা কিছুতেই ভাঙতে পারবে না, আবার জুড়তেও পারবে না? কেন বাচ্চাটা মা-কে বলতে পারবে না ওর কিসের ভয়?
কি করে পারেন উনি! ওনার নিজের কষ্ট হয় না?
সেই লেখকটাকে আমি চিনি না ঠিকই, কিন্তু সবসময় মনে হয় আমার যাবতীয় অক্ষমতার মধ্যে উনি জড়িয়ে আছেন। থাকবেন।
এইভাবেই লেখকরা বেঁচে থাকেন। হয়ত!
ভদ্রলোকের লেখার মান আহামরি কিছু নয়। বাংলায় লেখেন। ভাষাটা সাধু-চলিত মিলেমিশে একটা চলনশই আকার ধারণ করে। অর্থাৎ, যে ভাষায় আমরা আড্ডা মেরে থাকি, তার চেয়ে সামান্য কিছু ডিগ্রি কুলীন। লেখার স্টাইল, পেস, আইডিয়া, কোনটাই ঠিক আহা-এমনটা-তো-আগে-দেখিনি নয়।
ভদ্রলোকের লেখার মধ্যে যেটা আসল, সেটা হচ্ছে গল্প বলার মজলিসি বৈঠকি ধরন। চরিত্রগুলো যেন উনি ঠিক পরিশ্রম করে ভেবেচিন্তে গঠন করেন না। আমাদের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যে সব সাধারণ মানুষজন আছে, তাদের মধ্যে থেকে স্রেফ বেছেবুছে দুচারজন-কে তুলে নিয়ে গল্পের রেলগাড়িতে তুলে দেন। ব্যস, ওনার দায় ওইটুকুই। তারপর সেই গল্পের রেলগাড়ি নিজগুণেই গড়গড়িয়ে এগিয়ে চলে, আর তার সাথে গল্পও এগোয় তরতরিয়ে। যেন, লেখকের কোন দায় নেই, স্রেফ কয়লা জোগান দেওয়া ছাড়া। চরিত্র, সম্পর্কগুলো নির্বাচন করে দেওয়া হয়ে গেছে, এরপর নেহাতই তাদের নিজেদের ব্যাপার। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া সেরে নেওয়ার, গল্পের গতি, পরিনতি, ইত্যাদি বুঝে নেওয়ার। তাদের সমস্যা, সুখদুঃখ বা অন্য কোনরকম ঘটনার দায় নিতে লেখকের একান্তই অনীহা।
ঠিক এই ব্যাপারটাই আমার ভীষণ, ভীষণ ফ্যাসিনেটিং লাগে। কি করে পারেন ভদ্রলোক, এতটা নিরপেক্ষ, এতটা নির্লিপ্ত হতে? কি করে পারেন, ওদের সমস্যাগুলো কলমের আঁচড়ে এক কথায় মিটিয়ে না দিতে? কেন দুটো ছেলেমেয়ে স্রেফ মুখ ফুটে বলতে না পেরে সারাজীবন শুধু কষ্টই পেয়ে যাবে? কেন বাবা দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্যে কোনোদিন মা-কে স্যরি-টা বলে উঠতে পারবেনা? কেন পাশের বাড়ির ভাড়াটের ছেলেটা নিজের দায় স্বীকার করে চিঠিটা লিখেও ষোল বছর ধরে শুধু জমিয়েই রাখবে, কোনোদিন সাহস করে পোস্টবক্সে ফেলেতে পারবে না? কেন মেয়েটা সব জেনেবুঝেও তার মিথ্যে সংসারটা কিছুতেই ভাঙতে পারবে না, আবার জুড়তেও পারবে না? কেন বাচ্চাটা মা-কে বলতে পারবে না ওর কিসের ভয়?
কি করে পারেন উনি! ওনার নিজের কষ্ট হয় না?
সেই লেখকটাকে আমি চিনি না ঠিকই, কিন্তু সবসময় মনে হয় আমার যাবতীয় অক্ষমতার মধ্যে উনি জড়িয়ে আছেন। থাকবেন।
এইভাবেই লেখকরা বেঁচে থাকেন। হয়ত!
হয়ত-টয়ত নয়। এভাবেই লেখকরা বেঁচে থাকেন।
ReplyDeleteShei! Tobe eta 100% kalponik.
DeleteAmi lekhok noi. Choritro der dekhi, pore tara amay ghire dhore fis fus korte thake ora ja bole ami tai stenor moto likhe ni. Ami tader kotha kichhu matro bodle dile prochondo dhomok khai.
ReplyDeleteEi durottotai bodh hoe lekhokder muldhon. :)
ReplyDelete