আজকে অনেক, অনেকদিন পরে হঠাৎ করেই
তোকে স্বপ্নে দেখলাম - কেন, কে জানে! তোকে কি মিস করছিলাম? কি জানি, আলাদা করে বুঝতে
পারিনি তো একবারও। তুই আছিস, থাকবি, এরকমই তো হওয়ার কথা… আলাদা করে কবে, কখন, কেন,
এসব কিছু ভাবতে বসিনি তো কখনই! কিন্তু আজকে যেরকম আচমকা হানা দিলি পুরো স্বপ্নটা জুড়ে…
কি প্ল্যান বলত, তোর?
কি দেখলাম, জানিস? দেখলাম… না না
দাঁড়া, প্রথমে শুনলাম, ফোনে, যে তোর নাকি অসুখ করেছে। খুব সিরিয়াস, হসপিটালে ভর্তি। বোধ হয় মৌমিতা বলল।
আর তারপর আমি গেলাম তোকে দেখতে - যেন পাশেই থাকি, এপাড়া থেকে জাস্ট ওপাড়া! তা গিয়ে
দেখি, কেন জানিনা, তোর হসপিটালের ঘরটা একদম আমাদের নিচের তলার ওই ঘরটার মতন, যেখানে
আগে ঠাকুমা থাকত। আগে, মানে ভাগাভাগি হওয়ার আগে, যখন আমাদের আর কাকামনিদের একটাই রান্নাঘর
ছিল। তোর মনে আছে তো, ওই ঘরটা? তখন তুই যখন আসতিস, ওই ঘরটা পেরিয়ে আমার ঘরে আসতিস।
আমার ঘর মানে মেজিনাইন ফ্লোরের বিশাল চৌকো ওই স্টাডিটা, যেটায় তুই এসেই দু’হাত ছড়িয়ে দিয়ে বলতিস – "আয়্যাম দ্য কিং অফ দ্য ওয়ার্ল্ড!" আমি বলতাম, কি
জানি কি বলতাম! তখন বোধ হয় আমাদের ক্লাস ফোর, বা ফাইভ। তা সে যাকগে, আমি দেখলাম তুই
ওই ঘরটায় বিছানায় শুয়ে আছিস। হসপিটালের মতন সাদা বিছানার চাদর, স্যালাইনের বোতল ঝুলছে
তোর পাশ দিয়ে, পায়ের দিকে অক্সিজেনের সিলিন্ডার দাঁড় করানো এমারজেন্সির জন্য। আর তোর
গায়ে সাদা আর নীলরঙের ডোরাকাটা ইউনিফর্ম, যেমন ওরা পরিয়ে দেয়। তোর গায়ের চামড়া পুরো
সাদা, রক্তশুন্য লাগছিলো, আর চোখ নাক মুখ একটু ফোলা। বোঝাই যাচ্ছে, বড়সড় কিছু একটাই
বাঁধিয়েছিস এইবারে। কিন্তু কেন জানিনা, আমার একটুও ভয় করছিল না, দুশ্চিন্তা হচ্ছিল
না। মনে হচ্ছিল - এবারে আমি এসে গেছি, ব্যস নিশ্চিন্ত! আর জানিস, হসপিটালের ঘরে আমি
আর তুই ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন প্রানী ছিল না। কেন বলতো?
সত্যি যদি ধর আমার সাথে তোর এখন দেখা
হত, সেটা ঠিক কতদিন পড়ে হত বল দেখি? আমার হিসেবে অন্তত বছর পাঁচেক হয়ে গেছে তোকে দেখিনি।
কিন্তু কেন জানিনা, ওই মুহূর্তে ওই হসপিটালের ঘরে আমার আর তোর কোনরকম আলাপচারিতার প্রয়োজন
পড়লো না একেবারেই। আমি সোজা হেঁটে গেলাম তোর দিকে, তুই মুখ তুলে তাকালি, হাসলি, যেন
এমনটাই হওয়ার কথা ছিল, যেন আমার এমন করেই ঠিক আসার কথা ছিল তোর কাছে। ফিরে আসলাম যেন,
কোথাও থেকে। আর আমিও… না, চেয়ারে না, তোকে একটু সরতে বলে তোর পাশটাতেই বসলাম, খাটের
কোন ঘেঁষে। আর অদ্ভুতভাবে, যেটা জেগে থাকতে অনেকবার মনে মনে ভেবেছি কিন্তু কখনোই করিনি,
আমি সেই মুহূর্তে ঠিক সেই কাজটাই কেমন অবলীলায় করলাম - নিচু হয়ে ঠোঁট রাখলাম তোর ঠোঁটে।
আর তারপর, মানে পরের সিনটা, আরোই
আশ্চর্য! দেখলাম, সেদিনই বিকেলে তোকে হসপিটাল থেকে ডিসচার্জ করে নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।
আমি আর তুইই, শুধু। আমাদের বাড়িতে এলাম আমরা, আমাদের গলি পেরিয়ে, ওই দোকান ঘরগুলোর
সামনে দিয়ে হেঁটে। কি বলছিস – আমি স্বপ্নেও ফেমিনিস্ট, তাই? কি জানি, হতেই পারে! কিন্তু
এটা বল, তোকে সারিয়ে তো নিয়ে এলাম, জাস্ট একটা বেলার মধ্যেই!
একটা চুমু খাওয়ার এত জোর, সিরিয়াসলি?
আর কি বোকা দেখ আমি, পিউরিটানিজমের দোহাই দিয়ে একটা চুমুও নিজেকে খেতে দিইনি তোকে কখনো,
এতদিন ধরে। সেদিন, যেদিন আমরা ট্যাক্সি করে ফিরছিলাম আর বৃষ্টি পড়ছিল আর তুই জিজ্ঞেস
করেছিলি… সেদিনও না! লস-টা কার যদি জিজ্ঞেস করিস, বলব – জানিনা। সত্যিই জানিনা রে,
আজও!
কি হলে কি হত, কোনটা হলেও হতে পারত,
কোন ডিসিশনটা নিয়েও নেওয়া হয়নি… আজ সেসব হিসেব পেরিয়ে অনেকদুরের রাস্তা চলে এসেছি আমরা,
তাই না রে? আর, যেটুকু বাকি ছিল… আজকের স্বপ্নটায়, জাস্ট একটা আদরে আমার এতদিনের সব
জমিয়ে রাখা সব লাভ, ক্ষতি, সম্ভাবনা, আফসোসের যত হিসেব যেন সব চুকেবুকে গেলো, সব ধারকর্জ
মিটে গেলো তোর কাছে, জানিস বিতান?
এবারে যেদিন তোর সাথে দেখা হবে, সেদিন
প্রিটেন্ড করব যে এসব কিচ্ছু হয়নি, ঠিক আছে? স্বপ্নে হওয়া মানে তো না হওয়ারই সমান,
তাই না!
(বিতানের আরো গল্প - এইখানে!)
"Tujhe samajh nahi aayi, yeh kuch aur hai jo tujhe aur mujhe saath la raha hai, reh nahi na paaye alag, main aaj itni badi hasti hun, star hun main, itne saare paise hain mere paas, main famous hun, par andar sirf pata hai jalan hai mere andar, bechaini hai, main sirf tere saath hi set hun yaar, itni si baat hai, aur tu bhi vahi, mere saath nahi hoti to koi jaan leva bimaari ho jati hai tujhe, khoon banna band ho jata hai tera."
No comments:
Post a Comment
Did you like it? Did you not? Please leave a comment...