Guest-post, by Anirban. On International Women's Day!
“পুত্র রাজনীতি বড় কূট। এবয়সে তা বুঝবেনা। বোঝবার চেষ্টা কোরোনা।” আজকের মহম্মদ হয়ে বড় জানতে ইচ্ছা করে, রাজনীতি কি শুধু সংসদ, বিধানসভা ও নানান জনপ্রতিনিধি সভাতেই সীমাবদ্ধ? স্কুল, অফিস, কাছারির থেকেও যে রাজনীতি প্রাচীন ও চিরকালীন – সেহল "রান্নাঘরের রাজনীতি"। রান্নার ব্যবস্থা, রন্ধনপ্রণালী, রান্না করা খাবারের ভাগ সবকিছুর মধ্যেই যে তীব্র রাজনীতির আকর সেই রাজনীতিই এ সমাজের পুরুষতন্ত্রের আকর।
নিজেদের প্রাধান্য টিকিয়ে রাখার এহেন পন্থা অসামান্য। “খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার” এ বেধে দাও।তারপর নিজেরাই “সাস ভি কভি বহু থি” হয়ে আমরা যা পাইনি তা তোমরা পাবে না নীতিতে চলে যাবে। “ঘরের লক্ষ্মী”, “মাতৃরূপিনী” এসব ছেড়ে কি নারীকে রক্তমাংসের একজন মানুষ হিসেবে ভাবতে খুব অসুবিধা? সে দেবী নয়, সে বেশ্যা নয় – আমার মত একজন মানুষ। এত insecurity কিসের? জন্মানোর আগেই ভ্রূণ অবস্থাতেই মেরে ফেলো! ছোটবেলা থেকেই তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দাও তারা নিকৃষ্ট! জীবনের অন্যতম মোক্ষ বিয়ে আর স্বামীর ঘর।
সে স্বামী যদি ধর্ষকও হয় – দোষ নিশ্চয়ই মেয়েটির। আমার নিজের মা ২০বছরের ওপর মেয়েদের স্কুলে শিক্ষকতার পড়েও মনে করেন মেয়েদের শ্লীলতাহানির অন্যতম কারণ মেয়েদের পোশাক। পুরুষতন্ত্রকে মেনে নিতে নিতে আমারও চোখে লাগে না, যখন ১৭ঘন্টা ট্রেনজার্নি করে এসে আমার শাশুড়ী ১মিনিট বিশ্রাম না নিয়ে বাড়ির সবার জন্য চা চাপান। সকালে আমার মেয়ের জন্য আমার স্ত্রীর পরিবর্তে আমি দুধের ব্যবস্থা করলে তাঁর অস্বস্তি হয়। কারণ এসবই আমাদের সবার কাছে দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাশিত। প্রত্যাশিত ভাবেই দ্রৌপদী নামটি শুনলেই আমাদের মনের মধ্যে তার বাকি সমস্ত গুণ ভুলে তার একটি পরিচয়ই মনে পড়ে। কিন্তু কই অর্জুন বা কৃষ্ণকে তো আমরা playboy হিসেবে ভাবিনা? লক্ষ্মণকে molester, রামকে স্ত্রীকে রক্ষা না করতে পারা আর পরে সেই স্ত্রীকেই আগুনে ফেলে দেয়ার জন্য মেরুদন্ডহীন ক্লীব বলিনা! আমি জানি লোকেশুনে হাসবে কিন্তু বাঙালী মধ্যবিত্ত বলে। ৮০র দশকেই ভানুর কমিকে বলা হয়েছিল– “পাবলিকের প্যাদানির ভয়, যে নিজের বউরে আগুনে ঢুকতে কয় – সে আবার আদর্শ রাজা”। কিন্তু বাকি দেশ তাকে দেবতা মানে। পরমারাধ্য মনীষীদের রাজমহীষীদের সঙ্গে যৌন সংসর্গে সন্তান “উপহার” ই তো আমাদের সনাতন সংস্কৃতি। আসারাম বাপু তো এই সনাতন সংস্কৃতিরই ধারক ও বাহক।আমাদের এই সমাজের পরিবর্তন আমার কাছে তো খুব-খুব দুষ্কর।
এ প্রসঙ্গের কিন্তু আরো একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে। একটু একটু করে হলেও আমি যে আর্থসামাজিক পরিমন্ডলে বাস করি তা খুবই ছোট হলেও– সেই পরিমণ্ডলে কিন্তু পরিবর্তন এসেছে এবং আসছে। খুব অল্প, খুব আস্তে হলেও আসছে। কিন্তু তার সঙ্গে আসছে আইনের অপব্যবহার।Indian Penal Code 498A র ভয়ে আমার সমসাময়িক লোকজন বিয়ের নামে সন্ত্রস্ত। কলকাতা শহরে এই আইনকে অস্ত্র করে পুরোদমে ব্যবসা শুরু হয়েছে। অষ্টমঙ্গলার আগেই নব্বধূ মোটা অর্থের বিনিময়ে “negotiate” করে separation নিচ্ছে। www.498a.org এ এরকম হাজারো কেসের বিবরণী রয়েছে। প্রায় ৯৫% কেসই শুধুমাত্র “শিক্ষা” পাওয়াতে চেয়ে। যা প্রমাণ করে কোথাও একটা ভুল হচ্ছে এবং এই ভুলেরও প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন। নইলে যেকজন চোখ খুলে দেখতে চায়, তারাও হয়তো চোখ খুবলে যাবার ভয় সেই ইচ্ছেটা হারিয়ে ফেলতে পারে। “An eye for an eye” - will ultimately make this whole world blind.
No comments:
Post a Comment
Did you like it? Did you not? Please leave a comment...