প্রথমেই বলে রাখা উচিত, আমার মতে ঋতুপর্ণ র সৃষ্টির নিরিখে “শুভ মহরৎ” একটি মধ্যমানের সিনেমা। আগে একবার দেখেছিলাম, কিছুটা কম বয়সে । স্মৃতি বলতে কাস্টিং , মার্ডার–মিস্টরি প্লট, ত্রিকোণ প্রেম, আর “জীবন মরণে”-র আশ্চর্য ব্যবহার ছাড়া বিশেষ কিছু ছিল না। সত্যি কথা বলতে, ভদ্রলোক মারা গেছেন বলেই যে আবার করে দেখতে বসলাম, তা অস্বীকার করা যায়না।
বলাই বাহুল্য, নতুন করে আবিষ্কার করলাম। সর্বোপরি, আবিষ্কার করলাম আমাদের চারিদিকে পড়ে থাকা, অথবা অযত্নে পিছনে ফেলে আসা, আপাত তুচ্ছ চোখ-এড়ানো ঘটনা বা সম্পর্কগুলিকে।
যৌথ পরিবার, বিয়ে করে আসা নতুন কাকিমা, ছোট্ট জোজোর “মামণি”। সদ্য-চেনা পৃথিবীতে দুজনে দুজনের সবচেয়ে কাছের মানুষ। আবার অপর দৃষ্টিভঙ্গিতে, এই কাকিমা এক অত্যন্ত সফল ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী, এবং বেশ কিছু বছর পরবর্তী জীবনে একজন ধন-সমৃদ্ধা, গর্বিতা, এক্সট্রাভ্যাগান্ট একজন ভদ্রমহিলা। কিন্তু আদরের জোজোর কাছে কিন্তু, আজও, সে মামণিই, যে তার হাতেখড়ির দিন তিনশজন লোক খাইয়েছিলেন। তারপর, মামণির যখন নিজের ছেলে হল, জোজোর তখনকার বয়েসের সেই ভীষণ অভিমান। আর তারপর, দ্বিতীয় প্রেমের সুত্রে মামণির বিবাহ-বিচ্ছিন্নতা, আমেরিকা চলে যাওয়া। “মামণি আমাকে এত ভালবাসত, চলে যাওয়ার পর একটা চিঠিও কি লিখতে নেই?” – আজকের প্রায়-তিরিশের জোজোর গলাটা ধরে আসে, নেহাতই ছেলেমানুষের মত। আর তাই-ই, সে পেশাগত দায়ে মামণির সিনেমার শুভ-মহরৎ পার্টিতে ছবি তুলতে যায় ঠিকই, কিন্তু মামণির একক ছবি বা সাক্ষাৎকার আজও মাথা নিচু করে এড়িয়ে চলে।
রাঙাপিসিমার কথা কিই বা বলবো। “মাসিমা, মালপো খামু।“ বা শরৎচন্দ্রীয় “আমার মাথা খাও, আর দুটো ভাত খাও।” গোছের যাবতীয় স্বভাব বা মানসিকতাকে অস্বীকার না করেও সে আপন মহিমায় স্বনির্ভর অথচ নিবিড়। অতি অল্প বয়েসে বিধবা, সুপুরি-জাঁতি-পানের-ডিবে, পাড়ার গ্রন্থাগার, আর হরিদাসী বেড়াল ও তার সন্তান-সন্তানাদি নিয়ে মা-মেয়ে-নাতি-নাতনীদের ভরা সংসার। তিনি তাঁর পোয়াতি বিড়ালকে যত্ন করে মাছ রেঁধে খাওয়ান, ঠিক যেভাবে আর পাঁচটা মা তাঁদের মা-হতে-চলা মেয়েকে আদরে-যত্নে ভরিয়ে রাখেন। রাঙাপিসিমার মা-ষষ্ঠীর সংসারে ভাইঝি মিলি হল নবতম সংযোজন। সে এক উঠতি সাংবাদিক। মেয়ে সিগারেট খায়, তো খাক না? কিন্তু বাথরুমে কেন, ঘরে বসেই খাক। এ হেন রাঙাপিসিমার কিন্তু একটাই শর্ত, ভালবেসে থাকো, কিন্তু আমার ওপর “চোপা” করা চলবেনা। স্রেফ এই কারণেই কিনা বিধবা মানুষ এত যত্নে নিজের একান্ত সংসারটুকু একা আলাদা করে পেতেছেন! এবং, অবধারিত ভাবেই, যুবতী ভাইঝিটির প্রেমে পরা “ছোকরা”-দের কিন্তু রাঙাপিসিমার সাথেই নির্ভেজাল আড্ডা দেওয়া, ছেলেবেলার গল্প, যাবতীয় মানসিক আদান-প্রদান।
আর বুদ্ধি? সেই নিয়েই তো সিনেমা, সেই নিয়েই তো আসল রাঙাপিসিমা। “শনিবারের মড়া, দোসর না নিয়ে কি যাবে?” দ্বিতীয় খুনটির ঠিক আগেই! পেশাদার গোয়েন্দার মতনই তুখোড় বুদ্ধি, অবিশ্বাস্য বিশ্লেষণ-ক্ষমতা ও যুক্তিবোধ, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ, স্থিতধী, অবিচল।
যতক্ষণ না, নেহাতই ভুলবশে, বিষাক্ত খাবার আরেকটু হলে গিয়ে পড়ছিল আস্তাকুঁড়ে, যেখানে হরিদাসী বা পাড়ার আর পাঁচটা অবোলা জীবজন্তুর অবাধ আনাগোনা। গোটা সিনেমায় সেই প্রথম, ও একমাত্রবার, রাঙাপিসিমার বিচলতা, আশঙ্কা, ও আর্তনাদ। কি না, গতবছরও তাঁর হরিদাসীর কয়েকটি বাচ্চা হয়েছিল, একদিন সবকটা উধাও হয়ে গেল, আর ফিরল না। পরেরদিন কাঠ হয়ে যাওয়া শরীরগুলোকে জমাদারের ময়লার গাড়িতে তুলে দিয়েছিল ঠিকে কাজের মেয়ে। প্রতিবেশীর ফেলে রাখা ইঁদুর মারা বিষ। শুনে, সদ্য প্রতিশোধ নেওয়া ছেলে-হারানো-মা, জোড়া খুন করে ওঠা এবং সকলের চোখ এড়িয়েও রাঙাপিসিমার কাছে ধরা পড়ে যাওয়া মানুষটি অসহায় আর্তনাদে বলে ওঠে - আপনি তাঁদের কিছু বললেন না? রাঙাপিসিমার তাঁর স্বভাবসিদ্ধ শান্ত ভঙ্গিতে উত্তর দেন - কি হবে? যে গেছে সে কি আর ফিরে আসবে!
বিদায়ের সময় প্রিয় অভিনেত্রিকে রাঙাপিসিমার সহজ অনুরোধ – একটা অটোগ্রাফ দেবেন? এর কিছু মুহূর্ত পরে, অভিনেত্রী তখন আত্ম- বিশ্লেষণে, অপরাধ বোধে, বা অন্য কোন চেতনায়, নিজেই নিজেকে কঠোর শাস্তিতে গভীর ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছেন, আর রাঙাপিসিমার অনুরোধের অটোগ্রাফটি তাঁর ঘর থেকে ডাকঘরের লাল গাড়ি করে পাড়ি দিয়েছে। হঠাৎই, একটা রাস্তার কুকুর এসে পড়ে চাকার তলায়, আর ড্রাইভার পরম যত্নে গাড়িটা থামিয়ে কুকুরটাকে বাঁচিয়ে আবার স্পীড তোলে জীবনের পথে।
প্রতিশোধ আর ক্ষমা, অথবা উপেক্ষা, প্রতিহিংসা অথবা তার নিষ্ফলতা, জীবনের প্রতি এই শ্রদ্ধা, সহমর্মিতা বা আকুতি - ভেবে পাচ্ছিনা শেষ কবে কে দেখিয়েছে, এতটা সহজ করে?
অন্য আরেকটা দিক তুলে ধরি। দুজন স্বল্পবয়সী যুবক, একজন স্বল্পবয়সী যুবতীর প্রেমে পড়েছে। একজন সুপুরুষ, স্মার্ট, কেতাদুরস্ত, সফল, আই-পি-এস অফিসার। অন্যজন, এক-কামরা ঘরে থাকে, গালভরা দাড়ি, ফতুয়া-জিন্স, ভারি গলায় চমৎকার গান গায়, আর ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে গলা বুজে আসে। প্রথমজনের সাথে প্রাথমিক মন দেওয়ানেওয়ার পর্ব শেষ। মেয়েটি এক আন্তরিক মুহূর্তে অপর ছেলেটিকে জিগ্যেস করে – এক সাথে কি দুজনকে ভালোবাসা যায়না? মুখচোরা ছেলেটি করুণ চোখ তুলে হাসে - তার পরিণতি? অমোঘভাবে ঘনিয়ে আসে রবীন্দ্রনাথ। ছেলেটার উদাত্ত কণ্ঠ আর গভীর ভালবাসা যেন সেই প্রবল নিরাশাকে ছাপিয়ে সুর খুঁজে পায় –
"জীবন মরণ সীমানা ছাড়ায়ে, বন্ধু হে আমার, রয়েছ দাঁড়ায়ে।"
আরেকটি ছোট্ট মুহূর্তর কথা না বললেই নয়। ভাইঝি-রাঙ্গাপিসির এক অতি-স্বাভাবিক সাংসারিক ঠোকাঠুকি, নেহাতই এক মুহূর্তের। ভাইঝি বলল – আমার জন্য আর কোনদিন লুচি ভেজোনা, প্লিজ। রাঙ্গাপিসি বলল– আমার তোকে দরকার নেই, যেখানে যাবি যা। আবহে এক হৃদয় টুকরো করা সুর – “আজ আমাদের ছুটি রে ভাই, আজ আমাদের ছুটি। আ হা হা হা হা।“
ঠিক এইখানেই ঋতুপর্ণ ঋতুপর্ণ। আর ঠিক এইখানেই, রবীন্দ্রনাথের গান।
মার্ডার- প্লট হিসেবে দুর্বল গল্প? হোক না!
বলাই বাহুল্য, নতুন করে আবিষ্কার করলাম। সর্বোপরি, আবিষ্কার করলাম আমাদের চারিদিকে পড়ে থাকা, অথবা অযত্নে পিছনে ফেলে আসা, আপাত তুচ্ছ চোখ-এড়ানো ঘটনা বা সম্পর্কগুলিকে।
যৌথ পরিবার, বিয়ে করে আসা নতুন কাকিমা, ছোট্ট জোজোর “মামণি”। সদ্য-চেনা পৃথিবীতে দুজনে দুজনের সবচেয়ে কাছের মানুষ। আবার অপর দৃষ্টিভঙ্গিতে, এই কাকিমা এক অত্যন্ত সফল ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী, এবং বেশ কিছু বছর পরবর্তী জীবনে একজন ধন-সমৃদ্ধা, গর্বিতা, এক্সট্রাভ্যাগান্ট একজন ভদ্রমহিলা। কিন্তু আদরের জোজোর কাছে কিন্তু, আজও, সে মামণিই, যে তার হাতেখড়ির দিন তিনশজন লোক খাইয়েছিলেন। তারপর, মামণির যখন নিজের ছেলে হল, জোজোর তখনকার বয়েসের সেই ভীষণ অভিমান। আর তারপর, দ্বিতীয় প্রেমের সুত্রে মামণির বিবাহ-বিচ্ছিন্নতা, আমেরিকা চলে যাওয়া। “মামণি আমাকে এত ভালবাসত, চলে যাওয়ার পর একটা চিঠিও কি লিখতে নেই?” – আজকের প্রায়-তিরিশের জোজোর গলাটা ধরে আসে, নেহাতই ছেলেমানুষের মত। আর তাই-ই, সে পেশাগত দায়ে মামণির সিনেমার শুভ-মহরৎ পার্টিতে ছবি তুলতে যায় ঠিকই, কিন্তু মামণির একক ছবি বা সাক্ষাৎকার আজও মাথা নিচু করে এড়িয়ে চলে।
রাঙাপিসিমার কথা কিই বা বলবো। “মাসিমা, মালপো খামু।“ বা শরৎচন্দ্রীয় “আমার মাথা খাও, আর দুটো ভাত খাও।” গোছের যাবতীয় স্বভাব বা মানসিকতাকে অস্বীকার না করেও সে আপন মহিমায় স্বনির্ভর অথচ নিবিড়। অতি অল্প বয়েসে বিধবা, সুপুরি-জাঁতি-পানের-ডিবে, পাড়ার গ্রন্থাগার, আর হরিদাসী বেড়াল ও তার সন্তান-সন্তানাদি নিয়ে মা-মেয়ে-নাতি-নাতনীদের ভরা সংসার। তিনি তাঁর পোয়াতি বিড়ালকে যত্ন করে মাছ রেঁধে খাওয়ান, ঠিক যেভাবে আর পাঁচটা মা তাঁদের মা-হতে-চলা মেয়েকে আদরে-যত্নে ভরিয়ে রাখেন। রাঙাপিসিমার মা-ষষ্ঠীর সংসারে ভাইঝি মিলি হল নবতম সংযোজন। সে এক উঠতি সাংবাদিক। মেয়ে সিগারেট খায়, তো খাক না? কিন্তু বাথরুমে কেন, ঘরে বসেই খাক। এ হেন রাঙাপিসিমার কিন্তু একটাই শর্ত, ভালবেসে থাকো, কিন্তু আমার ওপর “চোপা” করা চলবেনা। স্রেফ এই কারণেই কিনা বিধবা মানুষ এত যত্নে নিজের একান্ত সংসারটুকু একা আলাদা করে পেতেছেন! এবং, অবধারিত ভাবেই, যুবতী ভাইঝিটির প্রেমে পরা “ছোকরা”-দের কিন্তু রাঙাপিসিমার সাথেই নির্ভেজাল আড্ডা দেওয়া, ছেলেবেলার গল্প, যাবতীয় মানসিক আদান-প্রদান।
আর বুদ্ধি? সেই নিয়েই তো সিনেমা, সেই নিয়েই তো আসল রাঙাপিসিমা। “শনিবারের মড়া, দোসর না নিয়ে কি যাবে?” দ্বিতীয় খুনটির ঠিক আগেই! পেশাদার গোয়েন্দার মতনই তুখোড় বুদ্ধি, অবিশ্বাস্য বিশ্লেষণ-ক্ষমতা ও যুক্তিবোধ, সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ, স্থিতধী, অবিচল।
যতক্ষণ না, নেহাতই ভুলবশে, বিষাক্ত খাবার আরেকটু হলে গিয়ে পড়ছিল আস্তাকুঁড়ে, যেখানে হরিদাসী বা পাড়ার আর পাঁচটা অবোলা জীবজন্তুর অবাধ আনাগোনা। গোটা সিনেমায় সেই প্রথম, ও একমাত্রবার, রাঙাপিসিমার বিচলতা, আশঙ্কা, ও আর্তনাদ। কি না, গতবছরও তাঁর হরিদাসীর কয়েকটি বাচ্চা হয়েছিল, একদিন সবকটা উধাও হয়ে গেল, আর ফিরল না। পরেরদিন কাঠ হয়ে যাওয়া শরীরগুলোকে জমাদারের ময়লার গাড়িতে তুলে দিয়েছিল ঠিকে কাজের মেয়ে। প্রতিবেশীর ফেলে রাখা ইঁদুর মারা বিষ। শুনে, সদ্য প্রতিশোধ নেওয়া ছেলে-হারানো-মা, জোড়া খুন করে ওঠা এবং সকলের চোখ এড়িয়েও রাঙাপিসিমার কাছে ধরা পড়ে যাওয়া মানুষটি অসহায় আর্তনাদে বলে ওঠে - আপনি তাঁদের কিছু বললেন না? রাঙাপিসিমার তাঁর স্বভাবসিদ্ধ শান্ত ভঙ্গিতে উত্তর দেন - কি হবে? যে গেছে সে কি আর ফিরে আসবে!
বিদায়ের সময় প্রিয় অভিনেত্রিকে রাঙাপিসিমার সহজ অনুরোধ – একটা অটোগ্রাফ দেবেন? এর কিছু মুহূর্ত পরে, অভিনেত্রী তখন আত্ম- বিশ্লেষণে, অপরাধ বোধে, বা অন্য কোন চেতনায়, নিজেই নিজেকে কঠোর শাস্তিতে গভীর ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছেন, আর রাঙাপিসিমার অনুরোধের অটোগ্রাফটি তাঁর ঘর থেকে ডাকঘরের লাল গাড়ি করে পাড়ি দিয়েছে। হঠাৎই, একটা রাস্তার কুকুর এসে পড়ে চাকার তলায়, আর ড্রাইভার পরম যত্নে গাড়িটা থামিয়ে কুকুরটাকে বাঁচিয়ে আবার স্পীড তোলে জীবনের পথে।
প্রতিশোধ আর ক্ষমা, অথবা উপেক্ষা, প্রতিহিংসা অথবা তার নিষ্ফলতা, জীবনের প্রতি এই শ্রদ্ধা, সহমর্মিতা বা আকুতি - ভেবে পাচ্ছিনা শেষ কবে কে দেখিয়েছে, এতটা সহজ করে?
অন্য আরেকটা দিক তুলে ধরি। দুজন স্বল্পবয়সী যুবক, একজন স্বল্পবয়সী যুবতীর প্রেমে পড়েছে। একজন সুপুরুষ, স্মার্ট, কেতাদুরস্ত, সফল, আই-পি-এস অফিসার। অন্যজন, এক-কামরা ঘরে থাকে, গালভরা দাড়ি, ফতুয়া-জিন্স, ভারি গলায় চমৎকার গান গায়, আর ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে গলা বুজে আসে। প্রথমজনের সাথে প্রাথমিক মন দেওয়ানেওয়ার পর্ব শেষ। মেয়েটি এক আন্তরিক মুহূর্তে অপর ছেলেটিকে জিগ্যেস করে – এক সাথে কি দুজনকে ভালোবাসা যায়না? মুখচোরা ছেলেটি করুণ চোখ তুলে হাসে - তার পরিণতি? অমোঘভাবে ঘনিয়ে আসে রবীন্দ্রনাথ। ছেলেটার উদাত্ত কণ্ঠ আর গভীর ভালবাসা যেন সেই প্রবল নিরাশাকে ছাপিয়ে সুর খুঁজে পায় –
"জীবন মরণ সীমানা ছাড়ায়ে, বন্ধু হে আমার, রয়েছ দাঁড়ায়ে।"
আরেকটি ছোট্ট মুহূর্তর কথা না বললেই নয়। ভাইঝি-রাঙ্গাপিসির এক অতি-স্বাভাবিক সাংসারিক ঠোকাঠুকি, নেহাতই এক মুহূর্তের। ভাইঝি বলল – আমার জন্য আর কোনদিন লুচি ভেজোনা, প্লিজ। রাঙ্গাপিসি বলল– আমার তোকে দরকার নেই, যেখানে যাবি যা। আবহে এক হৃদয় টুকরো করা সুর – “আজ আমাদের ছুটি রে ভাই, আজ আমাদের ছুটি। আ হা হা হা হা।“
ঠিক এইখানেই ঋতুপর্ণ ঋতুপর্ণ। আর ঠিক এইখানেই, রবীন্দ্রনাথের গান।
মার্ডার- প্লট হিসেবে দুর্বল গল্প? হোক না!